বেলাব প্রতিনিধি: বেলাবতে স্ত্রীর স্বীকৃতি চাইতে গিয়ে শশুর বাড়ির লোকজনের হাতে নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে তানিয়া আক্তার নামে এক কিশোরী বধু। স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে শ্বশুর বাড়িতে গেলে উক্ত কিশোরীকে তার মাথার চুল কেটে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে এবং ওড়না দিয়ে কিশোরীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করার অভিযোগ করেন উক্ত কিশোরী।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার সকালে উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের ধুকুন্দি গ্রামে। নির্যাতিত কিশোরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ভাটেরচর একাদশ শ্রেণির কলেজ পড়–য়া ছাত্রী। নির্যাতিত কিশোরী জানান, ধুকুন্দি গ্রামের মৃত রহম আলীর ছেলে সৌদি প্রবাসি জাকির হোসেন (৪০) সাথে আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগে স্কুলে পড়ার সময় তার এক আন্টির মাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম। এরই প্রেক্ষিতে গত দেড় বছর আগে জাকির হোসেন উক্ত কিশোরীকে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে চট্রগ্রাম নিয়ে মোল্ল¬ার মাধ্যমে বিয়ে করে। বিয়ে করার পর জাকির হোসেন উক্ত কিশোরীকে ঢাকা ও নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকে। উল্লে¬খ্য যে, সুচতুর জাকির হোসেন এর আগেও তিনটি বিয়ে করেছে এবং বিয়ের কথাটি তানিয়ার কাছে গোপন করে। বর্তমানে জাকির হোসেন সৌদি আরবে অবস্থান করছে। সৌদি আরবে থেকেই তানিয়ার সাথে মাঝে মধ্যে ফোনে কথা বলে। সম্প্রতি তানিয়া জাকির হোসেনকে বাড়িতে নেয়ার জন্য ফোনে চাপ দিলে তার কথামত তানিয়া গত ৩১ মে বুধবার দিন প্রথম শ্বশুর বাড়ি ধুকুন্দি গ্রামে গেলে জাকিরের মা সকিনা, বোন সুরাইয়া, রুবি দ্বিতীয় স্ত্রী বেদেনা ও ভাগ্নি বিনা আক্তার তাকে মারধোর করে রাতে পাশ্ববর্তী গ্রাম আব্দুল¬ানগরে জাকিরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে পরদিন আবার বাড়িতে এনে মারধোর করে তাড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয় দফায় গতকাল সোমবার সকালে স্ত্রীর দাবিতে আবারও উক্ত কিশোরী ধুকুন্দি গ্রামে জাকিরের বাড়িতে গেলে উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাকে কিল ঘুষি মেরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থান সহ বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয় এবং দা দিয়ে মাথার চুল কেটে অমানষিক নির্যাতন করে। এ সময় কিশোরী বধুর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে উক্ত কিশোরীকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে বেলাব থানার এস.আই মাহবুব ঘটনাস্থলে এসে কিশোরীকে উদ্ধার করে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে ধুকুন্দি গ্রামবাসীর একাংশ মিছিল করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ধুকুন্দি গ্রামের বাসিন্দা ও আমলাব ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মেয়েটির চিৎকার শুনে আমরা জাকিরের বাড়িতে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করি। মানুষ মানুষকে এভাবে নির্যাতন করতে পারে না। আমরা ধুকুন্দি গ্রামবাসী এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
নির্যাতিত কিশোরী বলেন, জাকির আগেও তিনটি বিয়ে করেছে। এ কথা আমার কাছে গোপন করে বিয়ে করে। আজকে তার বাড়ির লোকজন আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে, চুল কেটে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি এর বিচার চাই এবং স্ত্রীর স্বীকৃতি চাই।
এ ব্যাপারে বেলাব থানার ওসি মো. বদরুল আলম খাঁন বলেন, ঘটনা শুনে আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। এখনো নির্যাতিত মহিলার পক্ষে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


0 comments:

Post a Comment