নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎপড়তায় মালয়েশিয়ায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এল এক প্রবাসী
তৌহিদুর রহমান: নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎপড়তায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এল এক মালয়শিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী। অহরণের পর নির্মম নির্যাতন করে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করার জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহৃত প্রবাসীর নাম দানিসুর রহমান ছোটন (২৫), সে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চর্ণগরদী গ্রামের বসিন্দা। গত ১০ জুন তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণের পর তাকে নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি পরিবারের লোকদের কাছে পাঠিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এ ব্যাপারে প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা পুলিশের স্মরণাপন্ন হন। তারপর জেলা গোয়েন্দা পুুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফারের বিশেষ তৎপড়তায় অপহৃত ছোটনকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুক্তি দেয়া হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জন কে বাংলাদেশ থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো, অপহরণ চক্রের সদস্য প্রবাসী শামীমের পিতা নরসিংদী শহরের বাসাইল মহল্লার জয়নাল আবেদীন (৫৮), তার ছেলে শরীফ (২৫) ও প্রবাসী শামীমের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (২৫)। তাদের গ্রামের বাড়ী নরসিংদী বুদিয়ামারা এলাকায় বলে জানা যায়।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী, ভারতীয় ও পাকিস্তানী লোকদের সমন্বয়ে একটি অপহরণ চক্র রয়েছে। এই চক্রটি বাংলাদেশী প্রবসীদের অপহরণ করে নির্মম নির্যাতন করে এবং সে নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় সাহায্য করে থাকে বাংলাদেশে থাকা তাদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ স্বজনরা। এমনি এক ঘটনার শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী দানিসুর রহমান ছোটন (২৫)। কুয়ালালামপুরের নিজ কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে সংঘবদ্ধ পেশাদার অপহরণকারী দল কর্তৃক অপহৃত হন তিনি। অপহরণকারীরা ১০/১২ জন বাংলাদেশী ও নেপালি শ্রমিকের সাথে একটি গুহায় হাত-পা বেধে আটক রাখে তাদের। তারপর পরিবারের নিকট ফোনে মুক্তিপণ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং নির্যাতনে করে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় ভিডিও কলে দেখানো হয়। মুক্তিপন না পেলে ছোটন কে জবাই করে হত্যার দৃশ্য দেখানোর হুমকি দেয়া হয়। উপায়ন্তর না দেকে অপহরণকারীদের কথামতো বিকাশ একাউন্ট ও আটককৃতদের কাছে সাড়ে ৪ লাখ টাকার মতো দেয় ছোটনের পরিবারের সদস্যরা। তারপরও সে মুক্তি না পাওয়ায় অপহৃত ছোটনের শ্যালক শফিকুল ইসলাম নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তারপর বাংলাদেশে টাকা নেওয়ার সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় ৩ জনকে। তাদের নিয়ে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করার পর বাধ্য হয়ে অপহরণকারীরা ছোটনকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুক্তি দেয়। অপহরণকারীদের ৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক বাকিরা মালেয়শিয়া ও পাকিস্থানের লোক বলে জানা গেছে। গোয়েন্দা পুলিশের তৎপড়তায় প্রবাসী ছোটন মুক্তি পাওয়ায় স্বস্তির নিশ^াস ফেলেছে পরিবারের সদস্যরা।
0 comments:
Post a Comment