দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়
আনোয়ার হোসেন, আশুগঞ্জ থেকে: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে সমাপ্ত হয়েছে দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুর নির্মাণকাজ। চলছে শেষ মুহূর্তের কিছু আনুষঙ্গিক কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো সময় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুটির উদ্বোধন করবেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ রেলসেতুটির ধারণক্ষমতা আগের সেতুর চেয়ে দ্বিগুণ। এতে থাকছে মিটার গেজ ও ব্রডগেজ ট্রেন চলাচলের সুবিধা। এটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সময় যেমন কম লাগবে, রেলভ্রমণ ও পণ্য পরিবহনও হবে সহজ ও নিরাপদ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের জন্য অন্যতম ও সহজ মাধ্যম ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ। তাই বর্তমান সরকার এ রেলপথ ডাবল/ডুয়েল গেজে রূপান্তরের এক মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়। চট্টগ্রাম-চিনকি-লাকসাম, ঢাকা-টঙ্গী-ভৈরব ও লাকসাম অংশের ডবল লাইন নির্মাণকাজ করা হয়। আখাউড়া-আশুগঞ্জ অংশেও এ কাজ শুরু হচ্ছে। এর জন্য দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুসহ আরও কিছু স্থাপনা নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়। প্রায় ৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার এ রেলসেতু বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যার সিংহভাগ ভারতীয় ঋণ সহায়তার (এলওসি) আওতাভুক্ত। চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় জয়েন্টভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইফকন-এফকনস প্রতিষ্ঠান ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এর নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও কিছু জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। তবে সময় বাড়লেও প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়নি। প্রকল্প সূত্র জানায়, বিদ্যমান সৈয়দ আবদুল হালিম রেল সেতু দিয়ে ১১/১২ টন ওজনের ট্রেন চলাচল করলেও নবনির্মিত এ সেতু দিয়ে ২৫ টন ওজনের রেল চলাচল করতে পারবে। এতে থাকবে একই সঙ্গে মিটার গ্রেজ ও ব্রডগেজ লাইন। ফলে সেতুটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলে সময় লাগবে বর্তমান সময়ের চেয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা কম। তা ছাড়া অধিক ওজনের ট্রেন চলাচলের সুযোগ থাকায় পণ্য পরিবহন সহজ ও দ্রুত হবে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো সময় এর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরও ট্রেন চলাচল শুরু হরেও চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এক বছর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় মেরামত ও কারিগরি সহায়তা দেবে। আশুগঞ্জ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন ইপ্টি জানান, সেতু চালু হলে বর্তমানে ট্রেনে যেমন অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দিতে হয়, তা আর থাকবে না। ফলে সময় কম লাগবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক ও দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পিডি মো. আবদুল হাই জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ শেষে এখন নাম্বারিং ও ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।
0 comments:
Post a Comment