আল-আমিন মিয়া, পলাশ প্রতিনিধি: পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মেম্বারদের বিরুদ্ধে হতদরিদ্রদের জন ৪০ দিনের সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের অধিকাংশ শ্রমিকদের কাজে না লাগিয়ে তাদের দিয়ে টাকা তুলে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কর্মরত শ্রমিকরা হাজিরা টাকা তুলতে গেলে ইউপি সদস্যরা ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে শ্রমিকদের থেকে মোটা অংকের কমিশনের টাকা কেটে নিচ্ছে। শ্রমিকরা টাকা দিতে না চাইলে তাদের কাজে না নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
আজ বুধবার সরেজমিনে কৃষি ব্যাংক পলাশ শাখায় গিয়ে দেখা যায় গজারিয়া ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের হাজিরার টাকা তুলছেন কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় ব্যাংকের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে গজারিয়ার ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য হাসিনা বেগম, শ্রমিক সর্দার বাবুলকে দিয়ে প্রতিটি শ্রমিক থেকে ৪শ করে টাকা নিচ্ছে। টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ সময় প্রকল্পে কর্মরত রাবেয়া, ফাতেমা, আমিনুল ইসলাম, নূরজাহান বেগম, নাজমা আক্তার সহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, তারা মহিলা মেম্বার হাসিনা বেগম ও অনু বেগমকে হাজিরা থেকে প্রতিনিয়ত কমিশন দিয়ে আসছেন। এছাড়া তাদের দিয়ে কাজ না করিয়ে টাকা তুলে ইউপি সদস্যরা সমস্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে। তারা আরো জানান, প্রথম পর্বের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে টানা ৬দিন কাজে না লাগিয়ে শ্রমিকদের দিয়ে লক্ষাধিক টাকা তুলে নিয়ে যায়। এসব বিষয়ে ইউপি সদস্য হাসিনা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এসব কাজ দেখবালের জন্য সরকার আমাদের কোন টাকা দেয় না, কাজ দেখবালের জন্য কিছু টাকা রাখা হয়। এছাড়া কাজের অগ্রগতি জানতে অডিট আসলে তাদেরকেও টাকা দিতে হয়। প্রথম পর্বের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে ৬দিনের টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে জানান, এই টাকাগুলো ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অডিটকে দেওয়া হয়েছিল। এতে ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মহসিন মিয়া ও ৭,৮,৯ এর মহিলা ইউপি সদস্য অনু বেগমও জড়িত আছে বলে জানান তিনি। গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বদুরুজ্জামান ভূইয়া বলেন,  টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি যতটা জানি ইউপি সদস্যরা শ্রমিকদের চেকবই লিখে দিতে ব্যাংকে যায়।
এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফখরউদ্দিন রাজী জানান, শ্রমিকরা টাকা তুলতে গেলে কোন ইউপি সদস্য ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিত্বে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


0 comments:

Post a Comment