শিবপুরে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদ’র ৭৫তম জন্মবার্ষিকী পালন
স্টাফ রিপোর্টার: শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামের ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদের ৭৫তম জন্ম বার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ, শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্ল্স হাই স্কুল এন্ড কলেজ, শহীদ আসাদ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ, শহীদ আসাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। শহীদ আসাদ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া’র আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আসাদ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান মিলন, শহীদ আসাদ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রফেসর নুরুল ইসলাম খান, শিবপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুদ্দিন মোহাাম্মদ আলমগীর, শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক সহিদুল হক সুমন, শিবপুর উপজেলা পাঠক ফোরামের সহ-সভাপতি বুলবুল আহম্মেদ ও রাসেল মোল্লা, শিবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম নূরচান, সাংবাদিক মাসুদ রানা, এস.এম আরিফুর রহমান, ছায়ানট এর সংস্কৃতিকর্মী কুলসুম আক্তার, শহীদ আসাদ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি শামিম মৃধা, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ প্রমূখ।
আসাদুজ্জামান আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ই জুন নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়ায় তার জন্ম। তার পৈতৃক নিবাস শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে। তার পুরো নাম আমান উল্লাহ মোহাম্মদ আসাদ। আসাদের পিতা আলহাজ¦ মাওলানা মোহাম্মদ আবু তাহের। তিনি হাতিরদিয়া ছাদত আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একটি শিক্ষিত সংক্রান্ত ও ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারে আসাদের জন্ম। আসাদ ছিলেন ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ৪র্থ। পৃথিবীতে প্রতিদিন কত মানুষের যে মৃত্যু হয় ইতিহাস তা মনেও রাখে না। আবার কোন মৃত্যুই জন্ম দেয় এক একটি জীবন্ত ইতিহাস। আসাদ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এম.এ. পাশ করেন। দেশ মাতৃকার মুক্তি সংগ্রামে নিজেকে বিলিয়ে দেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের নেতা আসাদ, ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে মনোনিবেশ করেন কৃষক সংগঠন গড়ার কাজে। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী আসাদ মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে, শিবপুর, মনোহরদী, রায়পুরা, নরসিংদী অঞ্চলে কৃষক সমিতি গড়ে তোলেন। আসাদ যে কত বড় সাহসী ও দক্ষ সংগঠক ছিলেন তার প্রমাণ মেলে ১৯৬৯ সালে। স্বৈরাচারী আইন বিরোধী আন্দোলন নতুন মাত্রায় যোগ করেন। আসাদ ধীরে ধীরে নিজেকে পরিণত করেছিলেন পেশাদার বিপ্লবী হিসেবে। ১৯৬৯ সালে উত্তাল সেই রক্ত ঝড়া দিনটিতে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাদের ১১ দফা কর্মসূচী অনুযায়ী ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক সভা আহবান করেন। সভায় হাজার হাজার ছাত্র যোগদান করেন। তারা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলের এক অংশ মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তা ধরে চাঁনখার পুলের দিগে অগ্রসর হলে সেখানে অবস্থানরত পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ কর্মকর্তা ডিএসপি বাহ্উাদ্দিনের পিস্তলের গুলি আসাদের বক্ষ বিদীর্ণ করেন। আসাদ মাটিতে লুটিয়ে পরেন।
0 comments:
Post a Comment