01:24
0
শান্ত বনিক : এটা কোন হরতালের মারপিট নয়, নয় কোন সভা সমাবেশ পন্ড করার এ্যাকশন, এমনকি বিরোধী দলকে পোটানোর দৃশ্য নয়। এটা ফরমালিনযুক্ত আম হরিলুটের সময় এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের সংষর্ষের দৃশ্য। গতকাল এই ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল কাউন্টার এলাকায়। পলাশ থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুন বুধবার বিকেলে ঘোড়াশাল কাউন্টার এলাকায় ট্রাকভর্তি আম দেখে টহলরত পুলিশের সন্দেহ হলে ট্রাকটি আটক করে পলাশ উপজেলায় নিয়ে যায় পলাশ থানা পুলিশ। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানমের নেতৃত্বে একটি মোবাইল কোর্ট গঠন করে আমগুলো পরীক্ষা করা হয় এবং উক্ত আমে ফরমালিন পাওয়া যায় বলে ট্রাকটি আটক করেন কর্তৃপক্ষ। ফরমালিনযুক্ত প্রায় ১০ মেট্রিক টন আম উপজেলা কোয়ার্টার এলাকায় সারারাত রেখে দেওয়া হয়। গোপন সূত্রে জানা যায় রাতেই এই ট্রাক থেকে বেশ কিছু আম লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা প্রায় ৩টা। এমন সময় আমগুলো ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত হয় আর তাই ম্যাজিস্ট্রেট খোঁজতে থাকে। উপজেলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম অসু¯’্য তাই তার পরিবর্তে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বীনিতা রানীকে পাঠানোর চিন্তা করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনিও অসু¯’্যতার কারনে অফিসেই আসেননি। শুর“ হয় মহা-বিপাক। প্রথম শ্রেণির কোন কর্মকর্তাকেই খোঁজে পাওয়া যা”েছ না। এমন সময় উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুবোধ কুমার দাসকে পাঠিয়ে দেয়া হয় আম ধ্বংস করার কাজে।
ঠিক করা হল ঘোড়াশালের কাউন্টার এলাকায় খোলামাঠে আম ধ্বংস করা হবে। তার জন্য ঘোড়াশাল পৌরসভা থেকে দুটি র“লারও যথা সময়ে উপ¯ি’ত হয়। কিš‘ ট্রাক থেকে আম নামানোর জন্য মোঃ আলী, আসাদ, জামাল, স্বপন গাজী, মাসুদ, মানিক, দুঃখু, করিম গাজী, বাবুল গাজী, উজ্জল ও হাসান নামে ব্যক্তিদের সাথে নেয়া হয়। যেই মাত্র আমভর্তি ট্রাকটি ঘোড়াশালের মাঠে গিয়ে উপ¯ি’ত ঠিক সেই সময়ে আশপাশের এলাকার প্রায় হাজার হাজার লোক জড়ো হয় এই মাঠে। ট্রাকটি মাঠে উপ¯ি’ত হওয়া মাত্রই হরিলুটের বাতাসার মতো এই আমের ক্যারেট (বাক্স) লুট করে নিয়ে যা”েছ এলাকাবাসী। মাত্র ৩ জন পুলিশের দ্বারা হাজার-হাজার লোকের লুটপাটের পরি¯ি’তি সামাল দিতে লাঠি সোঠা ব্যবহার করে পুলিশ। এসময় এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশের লাঠি পেটায় এলাকার শাহিন, রহিমা, আম্বিয়া, করিম, স্বপন, মনির, ইসমাইল, সাব্বির, কিছমত আরা ও সেলিনাসহ প্রায় ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানা যায়। 
পুলিশ নিরূপায় হয়ে ফরমালিনযুক্ত আমভর্তি ট্রাকটি নিয়ে যায় পলাশ উপজেলার সানের বাড়ি নামক ¯’ানে। সেখানে এই ট্রাকভর্তি আমগুলো পুলিশ, এলাকাবাসী ও ট্রাকে নিয়োজিত ১০জন শ্রমিক হরিলুটের মতো আমগুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। আর এই ফরমালিনযুক্ত ১০ মেট্রিক টন আম বাজারের ফল দোকানে বিক্রি হ”েছ অবাধে।
এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার কাছ থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সুশিল সমাজের কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ফরমালিন মানব দেহের ক্ষতি করে বিধায় মোবাইল কোর্ট করে ফরমালিন জব্দ করে তা ধ্বংস করার কথা কিš‘ কর্তৃপক্ষের এই উদাসিনতায় ফরমালিন যুক্ত ১০ ট্রাক আম হরিলুট করে এখন বাজারে বিক্রি হ”েছ। এটা খুবই দুঃখজনক।

0 comments:

Post a Comment