শান্ত বনিক : নরসিংদী জেলার মনোহরদীতে নীরবে নিভৃতে কাঁদে এলাকাবাসীর ফরিয়াদের বাণী বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পরে স্ত্রী’র বহুবিবাহের পরও প্রশাসনের চোখের আড়ালে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করছেন রেশন ও ভাতা। সরেজমিনে গেলে জানা যায় গত ১৭/১৮ বছর পূর্বে ৭১এর রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার বর্মন ওরফে দয়ালের সাথে মঞ্জুরানী বিশ্বাসের হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মঞ্জুরানী দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জননী হন। ভালই কাটছিল মঞ্জুরানীর সংসার জীবন, কিন্তু বিধি হল বাম ২০০৬ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার বর্মন চিরদিনের জন্য সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান। সুকুমার বর্মন মৃত্যুর এক বছর অতিবাহিত হবার পর অর্থলোভী মঞ্জুরানী তার যৈবিক চাহিদা পূরনের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার সংসার ত্যাগ করে গত ১৮/০৬/০৭ ইং তারিখে জনৈক গোপাল বর্মন, পিতা মৃত জগৎ চন্দ্র বর্মন সাং মাধুশাল, থানা মনোহরদী জেলা নরসিংদীর হাত ধরে গোপনে পাড়ি জমায় ও একই দিন তারিখে ঢাকাস্থ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে বিবাহের হলফনামা সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে গত ২০/০৬/০৭ ইং তারিখে ঢাকা শাখারী বাজার কালী মন্দিরে ধর্মীয় পুরোহিত দ্বারা হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধান মতে মন্ত্র পাঠ ও সাত পাকে বেধে মালা বদলের মাধ্যমে তাদের বিাবাহ সম্পন্ন হয়। উক্ত তারিখ হতে তারা বৈধ স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘর-সংসার করে আসছে। অপর দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্টে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হলে তদানীন্তন কর্মকর্তাকে ভুল বুঝিয়ে ও ভূয়া তথ্য প্রদান করে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার বর্মনের পারিবারিক কল্যান তহবিলের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন মঞ্জুরানী। উল্লেখ্য মঞ্জুরানী রামপুর বাজার সংলগ্ন আবাসন প্রকল্পে বসবাস করা অবস্থায় পার্শ্ববর্তী পূর্ব রামপুরের পরিতোষ দাসের সাথে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং দ্বিতীয় স্বামী গোপাল বর্মনকে ডিভোর্স দিয়ে পরিতোষ দাসকে স্বামী হিসেবে গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ০৬/০১/২০১১ইং তারিখে তারা ঢাকাস্থ নোটারী পাবলিকের কার্যলয়ে গিয়ে বিবাহের হলফনামা সম্পাদন করেন। যেহেতু মঞ্জুরানী বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার বর্মনের স্ত্রী নয়, তাই সে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সুকুমারের পারিবারিক কল্যান ট্রাষ্টের ভাতা পাওয়ার প্রকৃত উত্তরাধিকার নন। রামপুর আবাসন প্রকল্পের বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ সাত্তার ও রিয়াজ উদ্দিন নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্তমান স্বামী পরিতোষ চন্দ্র দাস তার সমস্ত ভরন পোষন করে আসছে কিন্তু লোক সমাজে পরিতোষকে স্বামী হিসেবে মানতে নারাজ কারন তাতে মঞ্জুরানীর মুক্তিযোদ্ধা পররিবারিক কল্যান ট্রাষ্টের ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ সকল বিষয় নিয়ে মঞ্জুরানীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মানুষ এক সময় নানান কিছুই করে, এখন পরিতোষের সাথে সংসার করলে আমার চলবে না, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে থাকলে জীবনে অনেক সুবিধা পাওয়া যাইব। এই ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মতিউর রহমান তারার সাথে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আগে এই ব্যাপারে অভিযোগ উঠলে মঞ্জুরানীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনা অস্বীকার করেন। তবে এখন যদি প্রমান হয় মঞ্জুরানী বিয়েতে জড়িত আছে তাহলে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিব। শেষ খবর পওয়া পর্যন্ত জানাযায়, গত ৯/০১/১৩ইং তারিখে নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর মঞ্জুরানীর ৩য় স্বামী পরিতোষ চন্দ্র দাস একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ পরিতোষ চন্দ্র দাস মঞ্জুরানীর সাথে সংসার জীবন চলাকালীন সময়ে জানতে পারে তার স্ত্রী অবৈধ ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকুমার বর্মনের স্ত্রী দাবি করে ভাতা, রেশন উত্তেলন করছে এতে পরিতেষ দাস প্রতিবাদ করায় তার সাথে সংসার করবে না বলে জানায় এবং পরবর্তীতে আলাদা ভাবে জীবন যাপন করতে থাকে, যার কারনে পরিতোষ দাসের পরিবার অর্থনৈতিক ভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার পরও প্রশাসনের নিরভ ভূমিকা জনমনে ব্যাপক ভিব্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, মনোহরদী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সিরাজ উদ্দিন ঘটনাস্থল রামপুর আবাসন প্রকল্পে সরেজমিনে তদন্ত করতে এসে আবাসন সংলগ্ন একটি বাড়িতে মঞ্জুরানীকে ডেকে নিয়ে তদন্তের পরিবর্তে বাহারি খাবারে মগ্ন হয়। এলাকাবাসী আরও জানায়, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তপন কুমার বিশ্বাসের বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে মঞ্জুরানীর ২য়া কন্যা প্রতিমা কাজ করত। এরই সুবাদে তপন কুমার বিশ্বাস বদলী হয়ে ঢাকায় চলে গেলে মঞ্জুরানীর ২য়া কন্যা প্রতিমাকে ঢাকাস্থ বাসায় কাজের মেয়ের চাকুরী পূণবহাল রাখেন। যার ফলে মঞ্জুরানী আবাসন প্রকল্পে প্রায়শই যারতার সাথে ঝগড়া ফ্যাসাদে ঝড়িয়ে পড়ে এবং নানাবিধ হুমকী ধমকি দিয়ে থাকে তপন কুমার বিশ্বাসের নাম ভাঙ্গিয়ে ও আধিপত্য বিস্তারের পায়তারা অব্যাহত রাখে। রামপুর আবাসন প্রকল্পের বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ সাত্তার প্রতিবেদককে জানায়, আমরা ৫/৭ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৬০/৭০ জনের মতো এলাকাবাসী মনোহরদী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সিরাজ উদ্দিনের সাথে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি আমাদের জবানবন্দী ও সাক্ষী গ্রহণ করে, এর কিছুক্ষন পরই সমাজ সেবা কর্মকর্তার মোবাইলে একটি ফোন আসে আর সেই ফোনই হয়ে গেল কাল, তারপর তিনি আমাদের বলেন, আপনাদের সাক্ষী গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। এর কারন জিজ্ঞাসা করলে তিনি স্পষ্ট বলে দেন উপরস্থ কর্মকর্তা এ বিষয়ে বারাবারি না করার জন্য নির্দেশ দি
য়েছেন আমার কিছুই করার নাই। সমাজসেবা কর্মকর্তা সিরাজ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জনান, সাবেক মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তপন কুমার বিশ্বাস ফোন করেছিলেন যার কারনে আমি নির্বীকার তারপরও চেষ্টা করব সঠিক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য। এলাকার সচেতন মহলের দাবি সকল অপকর্মের মূল হুতা মঞ্জুরানীর খুটিঁর জোর কোথায়? প্রশাসন কি পারবে, এই লাঘামহীন অনিয়মের রেষানল থেকে মুক্তি দিতে জন সমাজকে? বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকের নিকট।
#
শান্ত বনিক
নরসিংদী সংবাদদাতা।
০১৭১৩-৫১২৫৮২
১০/০৬/১৪খ্রি.
0 comments:
Post a Comment